অফিসের দেমাগি বস - পর্ব -০২ | Office Demagi Boss -Part - 02
#অফিসের_দেমাগি_বস
লেখক : Ovi Ahamed Raj
পর্ব : ০২
ভাবতে ভাবতে উপরে উঠছি আর ঠিক তখন লাগলো একজনের সাথে ধাক্কা 😨৷
ধাক্কা লাগার সঙ্গে সঙ্গে আমার ডিমের পলিথিনটা পড়ে যেতে লেগেছিল কিন্তু তখন কোনো রকমে ধরে ফেলেছি৷ যদি ডিম ভাঙতো তাহলে টাকা ঠিকই নিতাম৷
#Officer_Demagi_Boss_Part_02
#banglastory143
উপরের দিকে চোখ তুলে দেখি একটা ময়দাবতী থুক্কু মায়াবতী মেয়ে মুখটা গোমরা করে আর কিছুটা ভয় নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে৷ হয়তো এভাবে ধাক্কা লাগাতে ভয় পেয়েছে যদি কিছু বলি৷ কারণ দোষ মেয়েটার ই৷ সে ই দৌড়ে নামছিল৷
- সরি সরি আমি বুঝতে পারিনি৷ দুঃখিত😧
আমি : Its ok (একটু ভাব নিলাম😏)
- ধন্যবাদ কিন্তু আপনাকে তো আগে দেখিনি এখানে৷
আমি : নতুন উঠেছি ৪র্থ তলার ফ্লাটে৷
- ওহ পাশেরটা আমার মানে বাবার আরকি।
আমি : জ্বী আমি আসি৷
- নামটা তো শুনলেন না৷
আমি : প্রয়োজন বোধ করছিনা৷
- এতো ভাব কেন..(মিনমিন করে বলল)
আমি তাড়াতাড়ি করে রুমে এসে রান্না করার জন্য আলু আর ডিম সিদ্ধ করতে দিলাম😋৷
ভাগ্যিস ডিম পড়ে ভাঙেনি নয়তো এক্কেবারে সবশেষ হতো৷ টাকাও নিতে পারতাম না৷ মেয়েটি একটু বেশিই ভদ্র৷ রাগী মেয়ে হলে এতোক্ষণে ২গালে ৪টা থাপ্পর বসিয়ে দিতো৷
#অফিসের_দোমাগি_বস_পর্ব_০২
#Officer_Demagi_Boss_Part_02
#banglastory143
যাক গে এইসব বাদ দিই৷ একটু ফ্রেশ হয়ে এসে রাইস কুকারে চাল তুলে দিলাম৷ ডিম আর আলু সিদ্ধ হতে এখনো ৮মিনিট লাগবে৷ তাই রুমটা লক করে বাসার নিচের দোকানটাই এসে ৪টা স্পিড নিয়ে চলে আসলাম৷ আর কোম্পানি থেকেই সব দেওয়া আছে৷ টিভি, ফ্রিজ, খাট সব৷ স্পিড ৪টা ফ্রিজে রেখে তরকারী রান্নায় মন দিলাম৷
পুরো ৪৫মিনিট পরে খেতে বসলাম৷ খাবার খেয়ে শুয়ে পড়লাম৷ পরদিন আবার অফিস আছে৷
এভাবে প্রায় ১৫দিন কেটে গেল৷ আর অফিসের বসও আমাকে খুব বিশ্বাস করতে শুরু করেছে৷ কারণ কাজে কোনো ফাকি বাজি নেই আমার৷ আর যা করি তাতে ৯৫% ই ঠিক৷ মাঝে মধ্যে একটু আধতু ভূল হয়৷
এই কয়দিনে সেদিনের ধাক্কা লাগা মেয়েটার সাথে কয়েকবার চোখে চোখ পড়েছে৷ কিন্তু কথা বলিনি কোনো৷
আমি ৪৫মিনিট আগেই যেয়ে আমার কাজ দেখি একটু৷
একদিন সকালে অফিস যাওয়ার সময় আমার পাশের ফ্লাট টাতে ঝগড়া শুনতে পেলাম৷ কারণ বুঝতে পারলাম না৷ তাই চলে আসলাম অফিসে৷
#অফিসের_দোমাগি_বস_পর্ব_০২
#Officer_Demagi_Boss_Part_02
#banglastory143
মেঘা : কি খবর কেমন আছেন?
আমি : আলহামদুলিল্লাহ্ আপনি?
মেঘা : আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো৷ তা কাজ কর্ম কেমন চলছে আপনার?
আমি : হ্যাঁ আল্লাহ্'র রহমতে খুব ভালো৷ আপনার কেমন?
মেঘা : সেম😇জানেন স্যারের একটা মেয়ে আছে৷ আমার বান্ধবী হয়৷ তাই আমার কোনো ভয় নেই।
আমি : ওহ তাই? ভালো তো।
মেঘা : হুম সে আর ২মাস পর থেকে বসের চেয়ারে বসবে।
আমি : ওহ তাহলে স্যার এই বয়সে আরাম করতে পারবেন।
মেঘা : হ্যাঁ৷ আচ্ছা আসি পরে কথা হবে৷ আর আগামী ৩দিনের মধ্যে আপনার নিচ তলার ফ্লাটে শিফট্ হচ্ছি।
আমি : গ্রেট।
মেঘা : হুম।
মেঘা চলে গেল৷ আমি মন দিয়ে কাজ করতে লাগলাম৷
৫টার সময় অফিস ছুটি হলো৷ আমি রিক্সা নিয়ে বাসায় চলে আসলাম৷ তখন দেখলাম পাশের ফ্লাটের আংকেল রাগী ফেস নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে নিচে চলে গেলেন৷
আমি ফ্রেশ হয়ে বিস্কুট খেয়ে একটু ছাদে আসলাম৷ এসে দেখি সেদিনের সেই মেয়েটা বসে বসে কাঁদছে৷ মনে হচ্ছে আংকেল খুব বকা দিয়েছে তাই বসে বসে কাঁদছে৷
আমি ওখানে দাঁড়িয়ে হালকা কাশি দিলাম৷ তখন মেয়েটি কান্না থামালো৷ কি যে হলো প্রশ্ন করেই বসলাম..
আমি : কাঁদছেন যে ছোট্ট বাচ্চার মতো?
- ..............
আমি : সরি?
- বাবা বকেঁছে তাই কাঁদছি৷
#অফিসের_দোমাগি_বস_পর্ব_০২
#Officer_Demagi_Boss_Part_02
#banglastory143
আমি : ওহ কেন বকেঁছে জানতে পারি কি?
- হুম শুনবেন?
আমি : হুম বলুন।
- আমাদের ভার্সিটি থেকে পিকনিকে যাবে আর সেজন্য ২হাজার টাকা চেয়েছি৷ আমার কাছে ২হাজার টাকা আছে৷ কিন্তু বাবা টাকা না দিয়ে উল্টা বকা বকি করলো সকাল থেকে।
আমি : ওহ এই কেস?
- জ্বী আমার নাম তো এখনো জানেন না হয়তো।
আমি : জ্বী😑😑।
ফারিহা : হুহ আমার নাম নুসরাত জাহান ফারিহা৷😒
আমি : খুব সুন্দর তো আপু
ফারিহা : আপনার নাম?
আমি : মো আবু বক্কর সিদ্দীক৷
ফারিহা : ওড কিন্তু ভালোই৷
আমি : হাহাহা নামের কদর করতে শিখেন নি৷ আমাকে "নীল" বলে ডাকতে পারেন৷
ফারিহা : Thats better।
আধুনিক যুগের মেয়ে কি আর বলব😂৷
আমি ওকে ওখানে বসিয়ে রেখে আমার রুমে আসলাম৷ কালকে বাসা থেকে মিথ্যা বলে ৬হাজার টাকা নিয়েছি৷ সেটা আছে৷ সেখান থেকে ২হাজার টাকা নিয়ে আবার ছাদে আসলাম৷
#অফিসের_দোমাগি_বস_পর্ব_০২
#Officer_Demagi_Boss_Part_02
#banglastory143
আমি : এই নিন টাকা৷ (টাকাটা এগিয়ে দিয়ে)
ফারিহা : মানে? কিসের টাকা?
আমি : আপনার পিকনিকের।
ফারিহা : তো আপনি কেন দিচ্ছেন?
আমি : বড় ভাই হিসেবে দিচ্ছি।
ফারিহা : না আমি এটা কি করে নিবো?
আমি : কেন বড় ভাই কিছু দিলে নিতেন না নাকি🙄।
ফারিহা : উমমম নিতাম তো।
আমি : তাহলে দিচ্ছি রাখুন।
ফারিহা : কিন্তু।
আমি : কোনো কিন্তু না। এই নিন ২হাজার টাকা রাখুন এটা৷
টাকাটা দিয়েই রুমে চলে আসলাম৷ টাকাটা পেয়ে মেয়েটা মনে হয় অতিরিক্ত খুশি হয়েছে৷
রুমে এসে হালকা তরকারী আর ভাত রান্না করে খেয়ে দিলাম একটা ঘুম৷ ২দিন পরেই মেঘা চলে আসলো আমার নিচ তলার ফ্লাটে৷
২য় মাস কেটে গেল কাজ করার চাপেই৷ এইমাসে তো বেতন বেশি পেয়েছি তাই বাসাই ৬হাজার টাকা পাঠাই দিছি😂৷ কারণ আমি ছোট বাচ্চাদের মতো অতিরিক্ত বিস্কুট, চানাচুর, জুস এইসব খাই 😋।
এর মধ্যেই মেঘার সাথে ভালোই ভাব জমে গেছে৷ কিন্তু এখনো আপনি আপনি করেই বলি৷ মেঘা ওর মা-বাবার সাথে ফ্লাটে উঠেছে আর আমি একা৷
মাঝে মাঝে আমাকে বিরিয়ানি দিতে যেত, যখন ওরা রান্না করতো৷ উমম স্বাদের কথা কি বলব? খেতে চাইলে চলে আসেন৷
তো সেদিন ৫টায় অফিস ছুটি হয় আর আমি তখনই মেঘার সামনে হাজির৷
আমি : খুব তাড়া আছে নাকি?
মেঘা : না তো, কেনো?
আমি : আপনি কতো কি খাওয়ান তাই ভাবছি...
মেঘা : কি ভাবছেন?
আমি : আপনাকে ফুসকা খাওয়াবো।
মেঘা : সত্যি? (কিছুটা চিৎকার আর আনন্দের সাথে বলল)
আমি তো ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেছি ওর অতিরিক্ত রিয়েক্ট দেখে৷
আমি : জ্বী যাবেন নাকি অসুবিধা আছে?
মেঘা : আরে নাহ চলুন চলুন আর দেরি সইছে না।
আমি : হিহিহিহি।
মেঘা : হাঁসছেন যে?
আমি : না এমনি চলুন উল্টো দিকে আছে ফুসকার দোকান_😋।
মেঘা : হেঁটে যাবেন?
আমি : হুম মাত্র ৭মিনিটের রাস্তা৷
মেঘা : ওহ চলুন চলুন৷
#অফিসের_দোমাগি_বস_পর্ব_০২
#Officer_Demagi_Boss_Part_02
#banglastory143
দুইজন ফুসকার দোকানে যেয়ে দুই প্লেট ফুসকার অর্ডার দিলাম৷ হুহু আমিও খেতে পারি যে😁😋৷
একটু পরেই দুই প্লেট ফুসকা দিয়ে গেল৷ দুইজন খাওয়া শুরু করলাম৷ (কারো মুখে পানি আসলে কতৃপক্ষ দায়ী না 🙈)
খাওয়া শেষে বিল মিটিয়ে একটা রিক্সা নিয়ে বাসায় চলে আসলাম দুজন৷ আমার কেন যানি অসস্তি লাগছিল মেঘার ওতো পাশে বসতে৷
বাসায় এসে আবার একই নিয়ম,,তবে আজকে আর কিছু খেলাম না৷ পেট ভর্তি আছে ফুসকা খেয়ে৷
এভাবে আরো ১মাস কেটে গেলো৷ আর এইবার আমার ছোট্ট প্রমোশন হয়েছে৷ কারণ এখন আমার জায়গা ম্যানেজারের পেছনে যে ৩জন কাজ করে তাদের নিচে, বলতে গেলে বলা যায় তাদের সাথেই৷ আর এখন বেতন ৩২হাজার টাকা৷😏
সব আমার ভালো কাজের ফল৷ আর মেঘা আমার নিচে কাজ করে এখন৷ তবে এখন আমরা খুব ভালো বন্ধু হয়ে গেছি, আগের মতো আপনি আপনি বলিনা, এখন আমাদের কথা তুমিতে চলে এসেছে৷
আর পাশের ফ্লাটের মেয়েটাও এখন ভালোই খোঁজ খবর নেয়৷ মনে হয় সেদিন অনেক বড় উপকার করেছিলাম৷
আমার বসে আছি বিছানায় আর আমার বউটা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে তার কোমড় পর্যন্ত পড়া চুলে চিড়ুনি করছে৷ নিজেকে সামলাতে পারছিনা৷
উঠে গেলাম তার কাছে৷ পেছন থেকে তার পেটে হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরলাম৷ তার শরীরটা শিউরে উঠল৷ আর তার চুলের মধ্যে নাক ডুবিয়ে দিলাম৷ চুল থেকে মাতাল করার মতো সুগন্ধ বের হচ্ছে৷ নিজেকে নেশাগ্রস্থের মতো লাগছে৷ ওর কানে ফিসফিসিয়ে বললাম..
আমি : এই তোমার চুল থেকে মাতাল করা সুগন্ধ আসে কেন?
কথাটা বলেই ওর কাধেঁর উপর থেকে চুল সরিয়ে সেখানে আলতো করে চুমু দিলাম৷ আমার বউটা কেপে উঠল৷ এখনো পেটে হাত দিয়েই আছি৷ আর সে কাঁপছে৷
#অফিসের_দোমাগি_বস_পর্ব_০২
#Officer_Demagi_Boss_Part_02
#banglastory143
তখন তার কাঁনের লতিতে একদমই হালকা কামড় দিলাম,,সঙ্গে সঙ্গে আমার হাত শক্ত করে জড়িয়ে ধরল৷ ওকে আমার দিকে মুখ করে দাঁড় করালাম৷ ওর গোলাপি ঠোঁট দেখে নিজেকে আর সামলাতে পারলাম না৷ ডুবিয়ে দিলাম তার মিষ্টি ঠোঁটে আমার ঠোঁট৷ (This type ador only for my bow😌)
হঠাৎ করে আযানের শব্দে ঘুম ভেঙে গেল৷ হায় হায় বউটারে আদরও করতে পারলাম না৷😭কত্তো সুন্দর ছিলো স্বপ্নটা৷ ইসস্ রে মিস করলাম আদরটা😞৷
বিছানা ছেড়ে উঠে ভালো মতো ফ্রেশ হয়ে ওযু করে নামাজ আদায় করে নিলাম৷
আজকেও খাওয়া-দাওয়া করে একটু আগেই বেরোলাম ফ্লাট থেকে৷
#অফিসের_দোমাগি_বস_পর্ব_০২
#Officer_Demagi_Boss_Part_02
#banglastory143
মেঘা : চলো চলো তাড়াতাড়ি
আমি : কেন? এখনো তো অনেক সময় আছে৷
মেঘা : জানো না? আজকে স্যারের মেয়ে অফিসে আসবে৷
আমি : কই নাতো।
মেঘা : হুম তো চলো এখন?
আমি : হ্যাঁ হ্যাঁ চলো।
দুইজনে রিক্সা নিয়ে চলে আসলাম অফিসে৷ একটু পরেই আমি আমার ডেস্কে যেয়ে কাজ করা শুরু করে দিলাম৷ তখন পিয়ন চাচা এসে ডেকে গেল৷ বসের রুমে নাকি আমার ডাক পড়েছে৷৷
আমিও যেয়ে অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করলাম৷ তবে রুমে শুধু একটা মেয়েই আছে৷ বস নেই৷ তার মানে এটাই স্যারের মেয়ে আর নতুন বস৷
আমি : আসসালামু আলাইকুম ম্যাডাম?
- ওয়ালাইকুমুস সালাম৷
বলে আমার দিকে তাঁকালো আর আমি তো দেখেই থ হয়ে গেলাম৷ একি মানুষ নাকি সাক্ষাৎ একটা পরী৷ মানুষ এতোটা সুন্দর হতে পারে কি করে? মায়াবী টানাটানা দুইটা চোখ৷ চুল বেধেঁ রেখেছে৷ তবে খোলা রাখলে হয়তো আরো সুন্দর লাগতো৷
#অফিসের_দোমাগি_বস_পর্ব_০২
#Officer_Demagi_Boss_Part_02
#banglastory143
গোলাপি ঠোঁট দুইটা দেখেই কেমন জানি হারিয়ে যাচ্ছি৷ আর চোখের মায়ায় তো আরো আগেই ডুবে মরেছি৷ সব মিলিয়ে যেন নীল আকাশের সেই পরীদের রানী আমার সামনে বসে আছে৷ আর আমি একমনে তার দিকে তাঁকিয়ে আছি৷
-ঠাসসসসসসসসসস
-হঠাৎ আমার ভাবনার ছেদ ফাটিয়ে দিয়ে গালে কষে একটা থাপ্পর পড়লো৷ তাঁকিয়ে দেখি ম্যাম দাঁড়িয়ে আছে রাগী দৃষ্টিতে৷
- কি ফাইল করেছিস এটা? কাজ করতে পারিস না তো আছিস কেন অফিসে৷৷
♦♦♦
♦♦
♦
চলবে........................
লেখার ভূল ক্ষমার চোখে দেখবেন কিন্তু 😌
No comments