গল্প | বাড়িওয়ালীর মেয়ে - পর্ব-০৩ ◑ Bariwalir Meye - Part-03


লেখাঃ অনিক হাসান



২য় পর্বের পর......

বাথরুমে গিয়ে দেখি পানি নেই।



---আব্বু বলল,"দোতলায় গিয়ে তোর বাড়িওয়ালী আন্টিকে বল।"



আব্বুর কথামতো দোতলায় উঠে কলিংবেল চাপলাম।



একটু পর একটা সুন্দরি মেয়ে দড়জা খুলে দিলো।

 


---আমাকে দেখে মেয়েটা বলল, কে আপনি?



---আপনাদের নতুন ভাড়াটিয়া, আমি বললাম।



---আপনাদের রুম তো নিচে। এখানে কেনো? মেয়েটি রেগে বলল।



---একটা দরকার ছিল, তাই আসলাম। নরম সুরে বললাম।



---সুন্দরি মেয়ে দেখলেই একটা অজুহাত দেখিয়ে কথা বলতে চাওয়া ছেলেদের একটা বদ অভ্যাস, এটা আমি জানি।



এমনিতেই সকাল থেকে কাজের উপর আছি। তার উপর একটা অচেনা মেয়ের ঝারি শুনে রাগটা লাফ দিয়ে ১০০ ডিগ্রিতে উঠে গেলো।



মনে হচ্ছে দিয়ে দেই দুটো থাপ্পর। না থাপ্পর দেওয়া যাবে না, থাপ্পর দিলে বাসা ছাড়তে হবে। তাই আবার নরম সুরে বললাম, "আসলে আপনি যা ভাবছেন তা নয়। সত্যি আমার কথাটা বলার দরকার ছিলো।"



---একটা অপরিচিত ছেলের সাথে কোনো কথা নেই।এখুনি এখান থেকে যান বলছি, মেয়েটি চেচিয়ে বলল।



---রাগটা আর নিজের মধ্যে রাখতে পারলাম না। মেরে দিলাম একটা থাপ্পর।



আমাকে মারলেন কেনো? কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলল।



ওই চুপ! একদম কাঁদবি না। এখন আমি বলবো আর তুই শুনবি। তুই নিজেকে খুব সুন্দরি ভাবিস তাই না। কিন্তু আমি তোকে সুন্দরি ভাবি না, পেত্নী ভাবি। কেনো জানিস চামড়া সাদা হলে সুন্দর হওয়া যায় না। সুন্দর হতে হলে সু্ন্দর মন দরকার। যা তোর নাই। আমি তোর মা'কে বলতে এসেছিলাম ট্যাপে পানি নেই। কিন্তু তোর জন্য আর বলা হলো না।



---কি হয়েছে মা বিথী? এতো চেঁচামেচি কেনো? ভেতর থেকে একটা নারি কন্ঠ ভেসে এলো।



---মেয়েটা মানে বিথী কিছু বলল না। একটু পর একজন মহিলা রুমের ভেতর থেকে বেরিয়ে এল।



"আন্টি আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন?" আমি বললাম।



---ওয়ালাইকুম আসসালাম, বাবা ভালো আছি।



---তোমাদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে না তো? বাড়িওয়ালী আন্টি বলল।



---আন্টি আসলে ট্যাপে পানি নেই। সেটা বলতে এসেছিলাম। আমি বললাম



---ওহ। আমি পানির লাইন চালু করে দিচ্ছি। আর কোনো সমস্যা হবে না। বাড়িওয়ালী আন্টি বলল।



---ধন্যবাদ আন্টি। এখন আসি।



---বাবা একটু দাড়াও, পরিচয় করিয়ে দেই এটা আমার ছোট মেয়ে বিথী। বাড়িওয়ালী আন্টি বলল।



---আন্টি আমি ওনার সাথে একটু আগে পরিচিত হয়েছি।খুব সুন্দর ওনার ব্যবহার।



---রাতে আমার বাসায় তোমাদের সকলের দাওয়াত রইলো। আসবে কিন্তু।



---আচ্ছা আন্টি আসবো। বসায় কিছু কাজ আছে। এখন আমাকে যেতে হবে।



---আচ্ছা যাও।



রুমে এসে শুয়ে পরলাম। একটু পর গোসল করে ঘুমিয়ে পরলাম।



ঘুম ভাংলো ফোনের রিংটনে। তাকিয়ে দেখি রাফি ফোন দিছে।



---হ্যালো, বল কি হয়েছে।



---অনেক কিছু হয়েছে। আগে বল তুই আজ ভার্সিটিতে আসিস নি ক্যান?



---আর বলিস না। আজই বাসা পাল্টে ফেললাম। তাই আজ যেতে পারিনি।



---ওহ, ভালো করেছিস। বিকেলে তোদের ওখানে আসছি।ঠিকানা দে।



---ঠিকানা তোকে মেসেজ করে দিচ্ছি।



---এসে সব কথা বলবো।



---আচ্ছা।



বিকেলে রাফি বাসায় আসে। ওর সাথে বাইরে ঘুড়তে যাই।



দোস্ত গতকালের মেয়ের কথা মনে আছে তো?



---হুম মনে আছে। তা কিছু হয়েছে নাকি?



---তেমন কিছু না। আজকে ওই মেয়েকে দেখলাম আমাদের উওর পাশের রুমে ক্লাস করছে।



---ওই রুমে তো আমাদের জুনিয়রদের ক্লাস করানো হয়। 



---হুম, অনেক কষ্ট করে ওর নামটা জানতে পেরেছি।



---দোস্ত মেয়েটার নাম কি?



---তিথী।



---নামটা তো অনেক সুন্দর। দোস্ত আজ একটা ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছি।



---আবার কাউকে নিশ্চই মেরেছিস?



---হুম, মেরেছি।


---কাকে?


---বাড়িওয়ালীর মেয়েকে।


---কিহ! তোকে কিছু বলল না?



----রাফিকে দুপুরের ঘটনা খুলে বললাম।



-----দোস্ত ঠিক করেছিস।



-----হুম। দোস্ত সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে বাসায় যেতে হবে।


---আচ্ছা দেখেশুনে যাস।


রাতে রুমে শুয়ে আছি। এমন সময় আম্মু আসলো।


---আম্মু কিছু বলবে?


---হুম।


---কি? বলো...



-----রাতে খাবার জন্য তোর বাড়িওয়ালী আন্টি দাওয়াত দিছে। তোকেও সাথে যেতে হবে।



----মা তুমি আর আব্বু যাও, আমি যাব না।



---কেনো যাবি না?



---ভালো লাগছে না।



---কেউ দাওয়াত দিলে যেতে হয়।



----কিন্তু মা.....


----কোনো কিন্তু নয়। তোর আব্বু বসে আছে, চল।



----তোমরা যাও আমি আসছি।


---আচ্ছা।




আমি আব্বু আম্মু চললাম দুতলায় দাওয়ত খেতে। আম্মু কলিংবেল চাপলো। আন্টি দড়জা খুলে দিলো। আমরা সবাই ভেতরে ঢুকলাম।



আন্টি সোফা দেখিয়ে বলল, "আপনারা এখানে বসুন।আমি খাবার রেডি করছি।"



---আমরা বসে আছি। একটু পর আন্টি এসে বলল," চলেন সবাই। এখন খাবেন।"



খাবার টেবিলের দিকে তাকিয়ে ভূত দেখার মতো চমকে উঠলাম। ভার্সিটিতে প্রপোজ করা মেয়ে এখানে কেনো?সাথে বসে আছে দুপুরের রাগিনী। দুজন আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেনো আমাকে আস্ত খেয়ে ফেলবে। মাথাটা কেমন যেনো গুলিয়ে যেতে লাগলো।



---হঠাৎ আন্টি বলল......



চলবে..............

#banglastory143,

#bariwalir_meye_part_03,

#bangla_love_story,

#bangla_romantic_story,

#বাড়িওয়ালীর_মেয়ে

No comments

Powered by Blogger.